বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর স্মৃতি আঁকড়ে জঙ্গলমহলের ছেঁদাপাথর

15th August 2021 5:40 pm বাঁকুড়া
বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর স্মৃতি আঁকড়ে জঙ্গলমহলের ছেঁদাপাথর


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) :   এক সময়ের বীর বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর স্মৃতি ধন্য বাঁকুড়ার জঙ্গল মহলের ছেঁদাপাথর আছে ছেঁদাপাথরেই।  ছেঁদাপাথরের জল, জঙ্গল আর গুহায় হয়তো এখনও ইতিহাস ফিস্ ফিস করে কথা কয়। 

    প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ এই প্রতিবেদনের শুরুতেই অতীতের পাতা উল্টে দেখা যাক।  বারিকুল-ঝিলিমিলি রাস্তার পাশে শাল-পলাশ আর মহুয়ার জঙ্গল ঘেরা ছোট্ট জনপদ ছেঁদাপাথর। 

     কথিত আছে, এই ছেঁদাপাথরের জঙ্গলেই ১৯০৮ সাল নাগাদ স্বয়ং ক্ষুদিরাম বসু  কিছুদিন আত্মগোপন করেছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, এই জঙ্গলের কোন এক পাহাড়ি গুহায় এসে তিনি  লুকিয়ে ছিলেন। শুধু লুকিয়ে থাকাই নয়, সেই গুহার ভীতরে বসে তিনি বোমা বাঁধতেন এবং গোপন বৈপ্লবিক কাজকর্ম করতেন।  এমনকি বিপ্লবী দরের অন্যান্য সদস্যদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতেন বলেও খবর। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন বারীন্দ্র কুমার ঘোষ, বিভূতি সরকারদের মতো প্রথম সারীর বিপ্লবীদের। আর তাঁদের এই সব বৈপ্লবিক কাজে খাদ্য, অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করতেন স্থানীয় অম্বিকানগর রাজবাড়ির অন্যতম সদস্য রাজা রাইচরণ ধবলদেব। যিনি এলাকায় এখনো 'বিপ্লবী রাজা' নামেই পরিচিত। 

   কিন্তু ক্ষুদিরাম বসু জঙ্গল মহলের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিরাপদ আশ্রয়ের এই খোঁজ কিভাবে পেলেন। এবিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, বর্তমান পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুগবেড়িয়ার সুবিখ্যাত 'নন্দ' পরিবারের জমিদারি ছিল এই ছেঁদাপাথর গ্ৰামে। ঐ নন্দ পরিবারের সঙ্গে বিপ্লবী ক্ষুদিরামের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তাই এই নন্দ পরিবারের সৌজন্যেই ক্ষুদিরাম বসু এই জায়গার খোঁজ পান ও আত্মগোপন করে নিভৃতে সশস্ত্র কাজকর্ম পরিচালনা করেন। এমনকি অত্যাচারী কিংসফোর্ডকে সাহেব হত্যার ষড়যন্ত্র ছেঁদাপাথরের এই গুহায় বসেই হয়েছিল বলে অনেকে দাবি করেন। যদিও সেবিষয়ে কোন প্রামাণ্য তথ্য আজও মেলেনি। 

আশার কথা, দীর্ঘ অবহেলা শেষে শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর স্মৃতিতে রানীবাঁধ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে তাঁর নামাঙ্কিত উদ্যান তৈরী হয়। তৈরী হয় পর্যটক আবাস, সাংস্কৃতিক মুক্ত মঞ্চ ও ক্ষুদিরামের মর্মর মূর্তিও ।





Others News

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : তোপধ্বনি তে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর । শুরু হল মল্ল রাজাদের ১০২৫ বছরের অষ্টমী পূজোর সন্ধিক্ষণ।

প্রাচীণ ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে আজও নিষ্ঠাভরে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা 'মৃন্ময়ী নামে পূজিতা হন। জানা গিয়েছে, পূর্ব প্রথা মতোই প্রাচীণ রীতি মেনে মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে কামান দাগার মধ্য দিয়ে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে শুরু হয়ে গেল 'বড় ঠাকরুনে'র পুজো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দর্শক সাধারণের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙ্গা। সরকারী নিয়মকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনা। এমনকি এখানে কামান দাগার পর্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে অল্প সংখ্যক লোককে নিয়ে ঐ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

শুরুর সময় থেকে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করা হয় বড় কামানের গর্জনের শব্দে। যার আওয়াজে রাজবাড়িতে আরতি নৃত্যও শুরু হয়ে যায়।